ভিন্ন আলাপ

তেলআবিব লক্ষ্য করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের মিসাইল হামলা

ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবকে লক্ষ্য করে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠন হুতি। আজ বৃহস্পতিবার হুতির সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারে এক বিবৃতিতে এ হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। হুতির লক্ষ্য ছিল তেলআবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা সফলভাবে মিসাইলটি প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।

হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি ইয়েমেনে সক্রিয় এবং ইরানের সমর্থনপুষ্ট বলে মনে করা হয়। গত কয়েক বছর ধরে তারা সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে। তবে ইসরায়েলের দিকে মিসাইল নিক্ষেপ তাদের জন্য নতুন একটি পদক্ষেপ। এই হামলার মাধ্যমে হুতি গোষ্ঠী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের জটিলতায় নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের “আয়রন ডোম” নামক বিখ্যাত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম উন্নত এবং কার্যকরী। এই ব্যবস্থা রকেট ও মিসাইল প্রতিহত করার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। হুতির মিসাইল হামলার সময় আয়রন ডোম সক্রিয় ছিল এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা মিসাইলটি সফলভাবে প্রতিহত করতে পেরেছে। তবে হামলার ফলে তেলআবিব ও এর আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

এই হামলা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ইরান হুতি গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হুতির এই হামলা আঞ্চলিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পরোক্ষ সংঘাতকে আরও তীব্র করতে পারে।

হুতির এই হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য শান্তি সংস্থাগুলো এই সংঘাত যাতে আরও না বাড়ে, সে জন্য সকল পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের কাছ থেকে সমর্থনের আশ্বাসও পাওয়া গেছে।

হুতির এই মিসাইল হামলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের পাশাপাশি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে মিসাইল প্রতিহত করলেও, এই ঘটনা আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এই সংঘাত কী দিকে মোড় নেয়, তা এখনই বলা কঠিন। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ত্বরিত হস্তক্ষেপ ও সংলাপের মাধ্যমে এই সংকট নিরসনের পথ খুঁজে বের করা জরুরি।

এই ঘটনা আমাদের আবারও মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের জন্য সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কোনো বিকল্প নেই।

সূত্র/ ইয়েমেন নেটওয়ার্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button