
(আল মামুন রিটন, দীপ্তদেশ) আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞান ও ধর্মকে অনেক সময় একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে বাস্তবে এই দুটি শক্তি পরস্পরের বিপরীতে নয় বরং পরিপূরক। বিজ্ঞান মানুষকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের মাধ্যমে বাস্তবতা অনুধাবন করতে সাহায্য করে, আর ধর্ম মানুষকে নৈতিকতা, আত্মিকতা ও চেতনার উন্নয়নের পথ দেখায়। তাই বিজ্ঞান ও ধর্ম একসঙ্গে কাজ করে মানবজীবনকে আরও সমৃদ্ধ ও সার্থক করে তুলতে পারে।
বিজ্ঞান প্রশ্ন করে, পরীক্ষা করে এবং বাস্তবতাকে বিশ্লেষণ করে। এটি মানুষের জীবনকে সহজ, আরামদায়ক ও নিরাপদ করতে অসংখ্য আবিষ্কার ও উদ্ভাবন করেছে। প্রযুক্তি, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা কিংবা পরিবেশ বিজ্ঞান—সব ক্ষেত্রেই বিজ্ঞান আমাদের নতুন জ্ঞান দিচ্ছে এবং সমস্যার সমাধান এনে দিচ্ছে।
ধর্ম মানুষের আত্মিক চাহিদা পূরণ করে, নৈতিকতার শিক্ষা দেয় এবং জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভাবতে শেখায়। এটি মানুষের মধ্যে শান্তি, সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলে। ধর্ম বিশ্বাসের মাধ্যমে আশাবাদ এবং শক্তি প্রদান করে, বিশেষত যখন মানুষ বিপদ বা দুঃসময়ের মুখোমুখি হয়।
বিজ্ঞান ও ধর্ম আলাদা পথ ব্যবহার করলেও তাদের লক্ষ্য মানবকল্যাণ। বিজ্ঞান আমাদের বলে কীভাবে কিছু কাজ করা যায়, আর ধর্ম বলে কেন তা করা উচিত। একটি মানুষ যখন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উভয়কেই গ্রহণ করে, তখন সে আরও সচেতন, নৈতিক ও মানবিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।
বিজ্ঞান ও ধর্ম—এই দুই শক্তির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতা গড়ে তুললে সমাজ আরও উন্নত ও ভারসাম্যপূর্ণ হতে পারে। মানুষের জ্ঞানচর্চা যেমন বিজ্ঞানচর্চা ছাড়া অসম্পূর্ণ, তেমনি আত্মিক উন্নয়নও ধর্মচর্চা ছাড়া অপূর্ণ। তাই এ দুইকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে না দেখে সহযাত্রী হিসেবে দেখা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক।