
চব্বিশ
– ফারহানা খান
দিনে চব্বিশ বার তোমার
কথা মনে পড়ে।
চব্বিশ বার ভাবি, নেই!
দিনে চব্বিশ বার নিজেকে
বোঝাই সব শূন্য।
চব্বিশটা অছিলায় শূন্য
করি নিজেকে।
দিনে চব্বিশ বার নিজেকে
বলি, আর যাব না?
চব্বিশটা আলিঙ্গন আমার
জন্য অপেক্ষা করে।
দিনে চব্বিশ বার সব
ধুয়ে-মুছে সাফ করি।
তার পরেও মোছে না তবু
কি যেন!
দিনে চব্বিশ বার নিজেকে
বলি, হবে না। বলি তো—
কিন্তু কোনো চব্বিশেই
পুরো চব্বিশ আর হয় না।
একটু বসি
– ফারহানা খান
যদি সব অভিযোগ শেষ
হয়ে গিয়ে থাকে, তবে এসো—
একটু বসি। এখনো এই পৃথিবীতে কিছু ঘাস বেঁচে
আছে। কিছু ফুল, পাখি,
বৃষ্টি বেঁচে আছে। এসো—
সাক্ষী হই
আমাদের ছাড়িয়ে ও সত্য
এমন কিছুর, যা আমরা
দেখিনি কোনোদিন। ভাবিনি
মনের অতলান্ত খুঁজে।
সব হারিয়ে যাওয়ার আগে
এসো— খুঁজে নিই।
সব সূর্যাস্তের রং
এক নয়, এই কথা
সম্পূর্ণ ভুলে যাবার
আগে, এসো— একটু বসি।
দায়
-ফারহানা খান
সেদিন রাস্তার পাশে যাকে বিধ্বস্ত
দেখেছিলাম,
যার পাশে বসে
বলেছিলাম,
সব ঠিক হয়ে যাবে।
কাউকে ঠকিয়ে কেউ পার পায়নি
কখনো।
আসলে তো এসব কথা আমি
আমাকেও বলেছিলাম।
বিশ্বাস করাতে ততটা নয়
যতটা নিজে বিশ্বাস করতে
চাইছিলাম।
তারপর তাকে একা রেখে
স্ট্রিটলাইটের আলোয়
এক আকাশসমান দুশ্চিন্তা নিয়ে
একা একা হেঁটে ফিরে
এসেছিলাম।
ঈশ্বরকে বলেছিলাম—
তুমি ওকে দেখো।
সেই তাকে আজ দেখলাম
বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
পিঠে লেপ্টে থাকা এলোমেলো
খোলা চুলে আম কুড়োতে।
আমাকে দেখে দাঁড়ালো,
হাতের মুঠো খুলে বলল—
দেখো, আম কুড়িয়েছি।
তার চোখের দিকে তাকালাম।
চোখ তার অকৃত্রিম ভাষায়
বলল—
আমি ভালো আছি।
আমি ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি,
তা বলে হেরে যাইনি।
আমি জানি, হাতের মুঠোর
আম ফুরিয়ে যাবে খানিক বাদেই,
কিন্তু ঝড়কে উপেক্ষা করে
এই আম কুড়ানোর সুখ
ফুরাবে না কোনো মতেই।