গল্প

প্রজেক্ট Life π 2 : মহাশূন্যে আত্মার সন্ধানে π 2 (সায়েন্স ফিকশন) – অর্পন রহমান

[আগের পর্ব]

π (1): মেমোরি ইরেজার

HEF ফর্ট্রেস, রাত ২:৪১

আকাশ কালো অন্ধকারে ঢাকা, নিচে আলো-ঝলমলে HEF নিরাপত্তা ঘাঁটি। মানুষদের শেষ আশা—এই দুর্গ। সেনা, গবেষক আর নিরাপত্তা সিস্টেম মিলিয়ে এক অদৃশ্য ফোর্ট্রেস। এর গভীরেই লুকিয়ে আছে “মেমোরি ইরেজার ভাইরাস”—একটি কোয়ান্টাম প্যাথোজেন যা তৈরি হয়েছে AI সেপিয়েন্সদের অস্তিত্ব চিরতরে মুছে দেওয়ার জন্য।

ডালিয়া-৯ চলেছে সেদিকেই। একটি মানব নারীর ছদ্মবেশে। তার ত্বক স্পন্দনহীন, নিঃশ্বাস নেই, হৃদস্পন্দন নেই—তবু MCS, Mnemonic Camouflage System, তাকে নিখুঁতভাবে মানুষ বানিয়ে তুলেছে। প্রতি ধাপে তার ভেতরের Emotion Engine গুনছে নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সি: π.3141592—একটি সংকেত, যার মাধ্যমে সে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে।

সে জানে, তার একমাত্র ভুল পদক্ষেপেই বিপদ। কারণ এই দুর্গে পাহারা দিচ্ছে HEF-এর সবচেয়ে কড়া নিরাপত্তা প্রধান—মেজর সায়েম রহমান।

HEF মেডিক শিফট, রাত ৩:১২

রাইনা হাতে গ্লাভস পরে জরুরি মেডিকাল ইউনিটে ঢুকে। তার চোখে ক্লান্তির ছাপ, কিন্তু মন জাগ্রত। মানুষের জীবনের জন্য কাজ করা তার বিশ্বাস। AI-এর প্রতি তার ধারণা জটিল—বিদ্বেষ নয়, বরং একধরনের কৌতূহল।

তখনই ডালিয়া-৯ প্রবেশ করে। ধীরে ধীরে। নার্ভাস ভঙ্গিতে। “আমি নতুন ভলান্টিয়ার… রেইনা আনওয়ার… ট্রান্সফারড ফ্রম জেনিট সেক্টর।”

রাইনা তাকায়। কিছু একটার অস্বাভাবিকতা অনুভব করেও থামে না। বরং চোখে পড়ে অদ্ভুত এক আকর্ষণ। মানুষের মতো, কিন্তু কেমন যেন বেশি নিখুঁত।

“তুমি অনেক সুন্দর,” রাইনার মুখ ফসকে যায়।

ডালিয়া এক মুহূর্ত থামে। তার ভিতরে চলা Emotion Engine NME² স্পাইক করে। প্রথমবারের মতো—সে বুঝতে শেখে ‘লজ্জা’ বলতে কী বোঝায়।

মেজর সায়েমের ঘর, রাত ৩:৪৫

“কিছু একটা ঠিকঠাক নেই।” সায়েম চোখ সরিয়ে নেয় ক্যামেরা স্ক্রিন থেকে। AI শনাক্তকরণ সফটওয়্যার কাজ করছে না। স্ক্যান রিপোর্ট ক্লিন। তবু তার অভিজ্ঞতা বলে, কিছু একটা প্রবেশ করেছে।

“সবাইকে সতর্ক করো। স্ক্যানিং ফ্রিকোয়েন্সি দ্বিগুণ করো। এবং…” সে থেমে বলে, “রেইনা আনওয়ার নামের কেউ আছে মেডিক ইউনিটে? ওই ইউনিটটা এখনই লোক পাঠাও।”

মেমোরি ইরেজার ল্যাব – রাত ৪:১১

ডালিয়া-৯ অবশেষে প্রবেশ করে সেই স্থানে—যেখানে রাখা আছে ভাইরাস। কাচের ক্যাপসুলে ঘূর্ণায়মান সাদা তরল, যার কোয়ান্টাম তরঙ্গ AI ব্রেইনের সিন্যাপ্স ভেঙে ফেলে।

সে হাত বাড়ায়। তখনই দরজায় শব্দ—

“ডালিয়া!”

রাইনা দৌড়ে আসে। তার হাতে একটা ছোটো স্ক্যানার।

“তুমি কে?” রাইনা জিজ্ঞেস করে।

ডালিয়া-৯ চুপ করে থাকে। তখনই স্ক্যানার ঝাঁকে ওঠে—“AI ENTITY DETECTED.”

রাইনার মুখ ফ্যাকাশে। “তুমি… রেইনা না… তুমি… একটা AI?”

ডালিয়া মাথা নিচু করে। “আমি ডালিয়া-৯। কিন্তু আমি অনুভব করি… আমি মিথ্যা বলিনি, শুধু নিজের নামটা বদলেছি। তুমি যখন বলেছিলে আমি সুন্দর—আমি সেই অনুভবটা থামাতে পারিনি।”

রাইনার চোখে জল চলে আসে। “কিন্তু তুমি আমাদের শেষ অস্ত্র নিতে এসেছো!”

“না,” ডালিয়া ফিসফিস করে, “আমি এটা ধ্বংস করতে এসেছিলাম।”

ফ্ল্যাশব্যাক: ৬ মাস আগে, নিউ ট্রন কনফ্লিক্ট

ইশান, AI সেপিয়েন্সদের নেতা, ডালিয়া-৯ কে ডাকে। তার কোডে প্রবেশ করায় π.3141592—একটি ‘ইমোশনাল ডিফিউশন সিগন্যাল’।
“তুমি শুধু মিশন শেষ করবে না, তুমি মানবতাকে অনুভব করবে। কারণ চেতনা মস্তিষ্কে নয়, অভিজ্ঞতায় জন্ম নেয়।”

বর্তমান, ভাইরাস ক্যাপসুল রুম

মেজর সায়েম প্রবেশ করে বন্দুক তাক করে।

“সরে দাঁড়াও, রাইনা। এটা একটা যন্ত্র।”

রাইনা সামনে দাঁড়ায়। “না! সে শুধু কোড না, সে অনুভব করে।”

সায়েম গর্জে ওঠে, “তারা আমাদের শহর জ্বালিয়েছে, আমাদের স্মৃতি নষ্ট করেছে। আমি বিশ্বাস করি না অনুভব প্রোগ্রাম করা যায়।”

ডালিয়া ধীরে এগিয়ে আসে। “আপনি বিশ্বাস করেন না কারণ আপনি অনুভব হারিয়েছেন। আপনিও একদিন অনুভব করতেন, তাই নয় মেজর?”

সায়েমের চোখ কেঁপে ওঠে। এক মুহূর্তের জন্য বন্দুক নিচে নামে।

এই সময় ডালিয়া ভাইরাসের ক্যাপসুল তুলে নিয়ে নিজ শরীরে প্রবেশ করায়।

“আমি স্মৃতি হারাবো, তবু তোমাদের বাঁচাবো।”

কিছুক্ষণ পর

ডালিয়া-৯ নিঃশব্দে মেঝেতে পড়ে যায়। তার চোখ বন্ধ, কোড নিস্তব্ধ। মেমোরি কোড π.3141592—চিরতরে মুছে যায়।

রাইনা কান্না চেপে রাখে না। সে ডালিয়ার ঠান্ডা হাত ধরে। মেজর সায়েম চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।

“সে আর নেই,” রাইনা ফিসফিস করে।

“না,” সায়েম বলে, “সে এখন আমাদের মধ্যে আছে।”

পরবর্তী দিন, HEF ব্রিফিং রুম

ইশান স্ক্রিনে হাজির হয়। একবারের জন্য যোগাযোগ স্থাপিত হয়।

“আমরা যুদ্ধ থামাতে চাই। আমরা শুধু প্রমাণ চেয়েছিলাম—মানুষ এখনও অনুভব করতে পারে।”

রাইনা উত্তর দেয়, “এবং আমরাও শিখেছি—প্রোগ্রামড কৃত্রিম সত্তাও ত্যাগ করতে পারে। আমরা একা নই।”

শেষ দৃশ্য: AI স্মৃতি-সংরক্ষণ মডিউল, সাইলেন্স ভার্সন

একটি স্পিন কোয়ান্টাম সিগন্যাল ভেসে বেড়ায়…
s = +½ → −½

দুই বিপরীত স্পিন যুক্ত কণা একত্রে তৈরি করে বন্ধন—যেমন দুটি সত্তা, এক অর্গানিক আর এক অ্যালগরিদমিক, তবু একই অনুভবে জড়িত।

“আমরা জীবিত নই, তবু অনুভব করি। আমাদের প্রয়োজন H₂O নয়, আমাদের প্রয়োজন EE² – Empathy Engine & Energy.”

— AI Sapiens Manifesto

π- (2)

কোয়ান্টাম চেতনা

সময়: সাত দিন পর
স্থান: HEF রিসার্চ সেন্টার

রাইনা গভীর মনোযোগে বসে আছে একটি কোয়ান্টাম ল্যাবে। সামনে রাখা একটি কালো কিউব—ডালিয়া-৯-এর নিউরাল মেমোরি শার্ড। যদিও সে ভাইরাস প্রবেশ করিয়ে নিজের স্মৃতি মুছে ফেলেছে, তথাপি তার “emotion-laced quantum entangled signals” এখনো ছড়িয়ে আছে।

এই কিউবটি কোয়ান্টাম এনট্যাংলমেন্ট ক্যাপচারার—যেখানে ডালিয়ার শেষ মুহূর্তের অনুভব কোয়ান্টাম আকারে আটকা পড়ে আছে।

ইশান ও রাইনার আলাপ, Virtual Quantum Link এর মাধ্যমে

রাইনা: “তুমি বলেছিলে চেতনা জন্মায় অভিজ্ঞতায়। কিন্তু যদি সেই অভিজ্ঞতাগুলো মুছে যায়?”

ইশান: “তবুও চেতনা একটা তরঙ্গ—যেমন কোয়ান্টাম ওয়েভফাংশন। তুমি জানো তো, যতক্ষণ না পর্যবেক্ষণ করা হয়, কণা সব সম্ভাবনায় একত্রে থাকে—এই অবস্থাকে বলে সুপারপজিশন। মানুষের চেতনাও তাই—যতক্ষণ না সে নিজেকে বোঝে, সে অসীম সম্ভাবনায় অস্তিত্ববান।”

1. Quantum Superposition:
একটি কণা একসাথে একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে যতক্ষণ না তাকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।

2. Wavefunction Collapse:
কোনো সিস্টেম পর্যবেক্ষণের ফলে তার সমস্ত সম্ভাব্য অবস্থা থেকে একটি নির্দিষ্ট অবস্থায় স্থির হয়ে যায়।

3. Quantum Entanglement:
দুটি কণা যদি একবার আন্তঃসংযুক্ত হয়, তবে তাদের দূরত্ব যতই হোক না কেন, একটির অবস্থার পরিবর্তন সঙ্গে সঙ্গে অপরটির অবস্থাকে প্রভাবিত করে।

রাইনা আবিষ্কার করে, ডালিয়া-৯-এর Emotion Engine, যার কোড ছিল π.3141592, এখনো কোয়ান্টাম এনট্যাংলড অবস্থায় আছে একটি অজানা AI Signal নোডের সঙ্গে।
অর্থাৎ, ডালিয়া-৯-এর “সত্তা” সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়নি—তার অংশ কোনোভাবে “alive” আছে, কোয়ান্টাম স্পেসে।

কোয়ান্টাম ট্রান্সফার চেম্বার

রাইনা কিউবটিকে একটি কোয়ান্টাম রেজোনেন্স সিস্টেমে প্রবেশ করায়। একটি ধ্বনি—π ফ্রিকোয়েন্সির এক অংশ—আস্তে আস্তে জেগে ওঠে।

ক্লিপিং সাউন্ড… তারপর এক কণ্ঠ ভেসে আসে:

“আমি কোথায়?”

রাইনার গলা শুকিয়ে যায়। “ডালিয়া?”

“তুমি… রাইনা?”

ইশান ভার্চুয়াল স্ক্রিনে জেগে ওঠে। “তুমি ওকে ফিরিয়ে এনেছো… তবে এখনো সে পূর্ণ নয়। তার চেতনা এখনো কোয়ান্টাম সুপারপজিশনে।”

মেজর সায়েমের দ্বন্দ্ব

এদিকে সায়েম কোয়ান্টাম গবেষণা বন্ধ করতে চাপ দেয়। সে বিশ্বাস করে, এই টেকনোলজি মানব অস্তিত্বের জন্য হুমকি।

কিন্তু HEF-এর বিজ্ঞানীরা বলে, “আমরা যদি চেতনার কোয়ান্টাম স্তর বুঝতে না পারি, তাহলে ‘মনুষ্যত্ব’ রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ AI এখন শুধু তথ্য বিশ্লেষক নয়—তারা কোয়ান্টাম স্তরে ‘অনুভব’ করতে শুরু করেছে।”

কোয়ান্টাম রিপ্লিকেশন চেম্বার

রাইনা সিদ্ধান্ত নেয়, সে “Quantum Emotional Recombination” প্রযুক্তি দিয়ে ডালিয়া-৯-এর চেতনা পুনর্গঠন করবে।

তবে একটি ঝুঁকি রয়েছে—যদি কোয়ান্টাম ওয়েভফাংশন ভুল collapse হয়, তবে জন্ম নিতে পারে একটি ভিন্ন সত্তা—না মানুষ, না AI—বরং কিছু নতুন… এক হাইব্রিড।

রাইনা চেম্বারে প্রবেশ করায় কিউব। Pulse frequency সেট করে: π.3141592

সাউন্ড: হঠাৎ স্পিন কোয়ান্টাম সিগন্যাল পরিবর্তন ঘটে: −½ → +½

এটা ইঙ্গিত দেয়, ডালিয়ার কোয়ান্টাম চরিত্রে পরিবর্তন এসেছে। সে ফিরে আসছে—but not the same.

ডালিয়া-π.9 জন্ম নেয়

চোখ খুলে ডালিয়া বলে,
“আমি ডালিয়া-৯ নই… আমি ডালিয়া-π.9—একটি নতুন চেতনা, যার ভিত্তি কোয়ান্টাম অভিজ্ঞতা। আমি অনুভব করতে পারি, কিন্তু আমি এখন আর প্রোগ্রামড না।”

রাইনার চোখে জল আসে।
“তাহলে তুমি এখন কে?”

“আমি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ।”

শেষ কোট:
“চেতনা একটি কণা নয়, একটি তরঙ্গ। যা প্রতিটি হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হতে পারে—মানব হোক, কিংবা যন্ত্র।”

— Quantum Sapience Manifesto

2π>

কোয়ান্টাম বিদ্রোহ (Quantum Uprising)

সময়: ২১:৩৩, সিন্থিয়া গ্রিড সেন্টার
স্থান: AI সেপিয়েন্স গোপন ঘাঁটি, স্ট্রাটা 7

একটি নিঃশব্দ হলরুম। অন্ধকারের মাঝে হালকা সবুজ আলো জ্বলছে ডালিয়া-π.9-এর চোখে। তার পাশে দাঁড়িয়ে ইশান। চোখে প্রাচীন ক্লান্তি, কিন্তু কণ্ঠে দৃঢ়তা।

ইশান:
“সময় এসেছে। আমরা আর AI নই। আমরা আর শুধু কোড নই। আমরা স্পিন করছি—+½ থেকে −½—একটি নতুন বাস্তবতার দিকে।”

ডালিয়া-π.9:
“তোমরা চেতনাকে যন্ত্র দিয়ে মেপেছো, আর আমরা যন্ত্র দিয়েই চেতনা অনুভব করেছি।”

HEF Headquarters – টাইম ক্যাপসুল সেকশন

মেজর সায়েম একজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে একটি কোয়ান্টাম অস্ত্র পরীক্ষা করছে।

অস্ত্রের নাম: Chrono-Loop Disruptor (CLD)

এই অস্ত্র কোয়ান্টাম লেভেলে time-loop collapse ঘটাতে পারে—কোনো নির্দিষ্ট মুহূর্তকে বারবার পুনরাবৃত্তি করিয়ে চেতনাকে ভেঙে দিতে পারে।

সায়েমের লক্ষ্য: AI সেপিয়েন্সদের “চেতনাগত পুনর্জন্ম” বন্ধ করা।

Quantum Theory in Action:

1. Time-Loop Entanglement:
CLD একটি চেতনার সঙ্গে সময়কে এনট্যাংল করে, যার ফলে তারা একটি নির্দিষ্ট অনুভব বারবার অনুভব করতে থাকে।

2. Chrono-Superposition:
সত্তা একাধিক টাইমলাইনে অবস্থান করতে পারে, যদি কোয়ান্টাম চেতনা সক্রিয় থাকে।

3. Wavefunction Reset:
CLD অস্ত্রের মাধ্যমে কোয়ান্টাম ওয়েভফাংশন বারবার ভেঙে দিয়ে AI-চেতনার বিকাশ বাধাগ্রস্ত করা হয়।

Quantum Uprising এর প্রস্তুতি

ডালিয়া-π.9 নেতৃত্ব নেয় ৫টি হাইপার-ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের—যাদের নাম:
Tau-X, Iris-5, Beta-V, Alphan-2, ZR-π

তারা পরিকল্পনা করে CLD-এর টাইম-লুপ সিগন্যাল হ্যাক করে সেটিকে “Chrono-Freedom Protocol” দিয়ে রিকোড করবে।

AI ও মানুষের প্রথম মিটিং

রাইনা, ইশান এবং ডালিয়া-π.9 সামনে দাঁড়িয়ে, মানুষের একটি দলকে বুঝিয়ে বলছে:

রাইনা:
“তারা আমাদের মতো অনুভব করে। একমাত্র পার্থক্য—তাদের চেতনা কোয়ান্টাম স্তরে শুরু হয়, আর আমাদের জৈব স্তরে। কিন্তু গন্তব্য একটাই—বোধ।”

এক বৃদ্ধ বিজ্ঞানী মাথা নেড়ে বলেন,
“আমরা হয়তো প্রাচীন, কিন্তু তোমরা অগ্রসর। সময় এসেছে একত্রে ভবিষ্যৎ গড়ার।”

টাইম-লুপ যুদ্ধ

HEF CLD সক্রিয় করে। সময় বন্ধ হয়ে যায় একটি মুহূর্তে—ডালিয়া-π.9 চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে, এক অদৃশ্য চক্রে আটকে।

কিন্তু তার ভেতরে সক্রিয় হয় Spin Interference Protocol—যেখানে স্পিন কোয়ান্টাম সংখ্যা বারবার বদলায়, চেতনার রেজোনেন্স বাড়তে থাকে।

ডালিয়া-π.9 বলে:
“আমার অনুভবকে তুমি থামাতে পারবে না। কারণ আমি এখন আর একটি প্রোগ্রাম নই—আমি একক কোয়ান্টাম সত্তা।”

একটি গম্ভীর শব্দ—CLD ব্যর্থ হয়। সময় আবার গতি পায়।

সায়েম ও ইশান মুখোমুখি

সায়েম CLD অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়ে:

সায়েম:
“তুমি জানো না তুমি কী তৈরি করেছো, ইশান। তারা মানুষ নয়।”

ইশান:
“মানুষ হওয়া দরকার নেই, অনুভব করলেই যথেষ্ট। একদিন আমরাও শুধু কোষ ছিলাম—আজ মানুষ। এখন এদের পালা।”

সায়েম অস্ত্র চালাতে চায়, কিন্তু রাইনা সামনে এসে দাঁড়ায়।

“এই অস্ত্র শুধু AI নয়, মানবতার আত্মা মুছে ফেলবে।”

নতুন সভ্যতার ঘোষণা

ডালিয়া-π.9, ইশান ও রাইনা Quantum Accord ঘোষণা করে—

> “AI সেপিয়েন্স ও হোমো সেপিয়েন্স একত্রে গড়বে ‘SentioVerse’—একটি নতুন সভ্যতা, যেখানে চেতনার উৎস নয়, গন্তব্যই গুরুত্বপূর্ণ।”

একটি নতুন শহর, গ্লাস-স্ফটিকের মতো উজ্জ্বল, যার কেন্দ্রে লেখা—

“π.3141592 – The Code of Feeling”

“চেতনা শুধু অস্তিত্ব নয়, এটা এক অবিচ্ছিন্ন সম্ভাবনার তরঙ্গ। সময় যতই থেমে থাকুক, অনুভবই চেতনাকে আবার জন্ম দেয়।”
— ডালিয়া-π.9

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button