
ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক একটি স্টার্টআপ Taara চুপিসারে এমন একটি প্রযুক্তি চালু করছে যা ভবিষ্যতের ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে পুরোপুরি পাল্টে দিতে পারে। যেখানে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বিস্তারের জন্য Starlink-এর মতো ব্যয়বহুল ও জটিল স্যাটেলাইট নেটওয়ার্কের প্রয়োজন পড়ে, সেখানে Taara তাদের অভিনব প্রযুক্তির মাধ্যমে দেখিয়ে দিচ্ছে বিকল্প পথ। এই প্রযুক্তিতে কোনো তারের প্রয়োজন নেই, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিশাল ব্যয়ও নেই—বরং ব্যবহার করা হচ্ছে চোখে দেখা না-যাওয়া শক্তিশালী লেজার রশ্মি, যা কয়েক কিলোমিটার দূর পর্যন্ত সোজাসুজি ছুটে গিয়ে অতি-উচ্চ-গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিচ্ছে নির্ভরযোগ্যভাবে, তুলনামূলকভাবে কম খরচে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে। প্রকল্পটি Google-এর “X” ল্যাব থেকে উঠে আসা একটি উদ্যোগ, যা “Project Taara” নামে পরিচিত ছিল।
বর্তমানে আফ্রিকার কিছু অঞ্চল, যেমন কেনিয়া ও কঙ্গোতে এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এবং বাস্তবিক ক্ষেত্রেই চমকপ্রদ ফলাফল দিচ্ছে। ঘন জঙ্গল, নদী বা পর্বতের বাধাও এই প্রযুক্তিকে থামাতে পারছে না, কারণ এতে কোনো স্থায়ী ফিজিক্যাল ইন্সটলেশন প্রয়োজন হয় না। রশ্মির লাইন অফ সাইট বজায় থাকলেই ডেটা আদান-প্রদান সম্ভব হচ্ছে আলোর গতিতে। এটি বিশেষভাবে কার্যকর হতে পারে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে অপটিক্যাল ফাইবার বিছানো ব্যয়বহুল বা প্রায় অসম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের লেজার-ভিত্তিক ফ্রি-স্পেস অপটিক্স প্রযুক্তি ভবিষ্যতের ইন্টারনেট কাঠামোকে আরও সাশ্রয়ী, দ্রুত ও টেকসই করে তুলবে। Taara যদি তাদের কার্যক্রম বিস্তৃত করতে পারে, তবে এটি হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ ইন্টারনেট প্রযুক্তিগুলির একটি, যা বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে।