কবিতা

অমীয় সুর – মো: সাব্বির হোসেন

হায়! সেই সুর কি যে শ্রুতিমধুর, যার বাহমানতা অনন্ত দূর!
অদ্য মোর বক্ষচিতল ক্ষত-বিক্ষত বেদনা-বিধুর, চঞ্চলা মন হয়েছে স্থবির।
হায়! তব আফসোস হয়, সেই সুরে নত হয় না কুলষিত আত্মাদের শির;
এই অন্তিম কলিযুগে অদ্য তারা মূক আর বধির।

যেই সুরে পাতাল, মর্ত, সপ্ত আসমান হয় কম্পিত, সেই সাথে অন্তর করে শীতল;
যেই সুরের দীপ্ততায় খোদার আরশের আসন কম্পিত হয়।
হায়! তব আফসোস কিসের নিমিত্তে অদ্য তারা কোলাহলে রয়?
অদ্য তাদের অস্তিত্ব ঢের গাঢ় হলেও অচিরেই তাহা হবে নিম্নস্থল।

এই সেই সুর, যে সুরে নাই কোনো তবলার ঠুকঠাক শব্দ, নাই কোনো বীণার তারের আওয়াজ, নাই কোনো বাঁশির চিকন মন-কারা ক্ষণস্থায়ী শব্দ;
তবুও অনন্তকাল, অনন্ত অঙ্গন, অনন্ত মুহূর্ত সেই সুর অবিনশ্বর ও চিরঞ্জীব।
অদ্য তবুও কুলষিত আত্মাদের কর্ণ কেন হয় না জব্দ?
অথচ যেই সুর সদ্য ভূমিষ্ঠ ধরাতে আসা নবজাতকের কানে শুনালে মৃদু হাসি দেয়।
সমুদ্রের বিশাল বিকট তিমি মাছ থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন কীটপতঙ্গ সেই সুরে অগাধ শান্তি পায়;
বাধ্য কুলবধূ, বাধ্য বালিকা, বাধ্য বুড়ি মাথায় আঁচল জোড়ায়, মুখে কপাট দেয়।
অথচ অদ্য তারা সেই সুর কানে শুনতে পায় না!

অথচ মহাকালের ডাকের আগমুহূর্ত পর্যন্ত এই অমীয় সুর বাজে, বাজবে।
তবে মহাকালের সেই শৃঙ্গার ফুৎকার হয়ে গেলে এই সুর আর বাজবে না!
তবে তখন তো আর সেই সুর শোনার কোনো মহিমা থাকবে না, রবে না কোনো প্রয়োজনীয়তা।
আচমকা শুধুই বিকট আওয়াজ আসবে, যেই আওয়াজ কর্ণের পর্দা ফাটিয়ে পড়বে;
যেই শব্দ দেখাবে ভয়ংকর রূপ, থাকবে না কোনো নমনীয়তা।

Related Articles

One Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button