
রাস্ট্রীয় বাজেট একটি দেশের অর্থনৈতিক নীতির প্রতিফলন এবং প্রশাসনিক পরিকল্পনার আর্থিক বিবরণ। এটি এক বছরের জন্য সরকারের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় পরিকল্পনার একটি লিখিত রূপরেখা, যা সাধারণত অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থাপন করেন। বাজেটের মাধ্যমে সরকার দেশ পরিচালনার জন্য কী পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে সংগ্রহ করবে এবং কীভাবে তা ব্যয় করবে, তার একটি সুসংহত পরিকল্পনা তুলে ধরে। এই প্রক্রিয়ায় জনগণের চাহিদা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার দিকগুলোর সমন্বয় ঘটে।
রাস্ট্রীয় বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ দুটি দিক হলো রাজস্ব বাজেট ও উন্নয়ন বাজেট। রাজস্ব বাজেটের আওতায় সরকার চলতি খরচ যেমন—কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, প্রশাসনিক ব্যয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের নিয়মিত ব্যয় ইত্যাদি নির্ধারণ করে। এটি মূলত সরকারের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য আয়-ব্যয়ের হিসাব। অন্যদিকে, উন্নয়ন বাজেট দেশের সামগ্রিক অগ্রগতির রূপরেখা। এতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ, বিদ্যুৎ ও পরিবহন খাত সম্প্রসারণ, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মতো কর্মকাণ্ডে ব্যয় পরিকল্পনা নির্ধারিত হয়। এই অংশটি সরাসরি জনগণের কল্যাণ ও দেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্ত।
রাস্ট্রীয় বাজেট কেবল একটি আর্থিক দলিল নয়, এটি একটি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির দিকনির্দেশনাও বটে। তাই এই বাজেট যেন জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়, আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখে এবং উন্নয়নের ভিত্তি দৃঢ় করে—সেটিই হওয়া উচিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূল লক্ষ্য।